Take a photo of a barcode or cover
alfaisalkanon 's review for:
প্রযুক্তির ক্রমবিকাশের এই যুগে নানা সুবিধার পাশাপাশি যেসব সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে প্রধান একটি হল অতিনির্ভরশীলতা যা অনেকের ক্ষেত্রে আসক্তিতেও পরিণত হয়। এ বইতে লেখক এই সমস্যাটিকেই বিশ্লেষণ করেছেন। বইয়ের শুরুটা করেছেন বেশ ইন্টারেস্টিং একটা তথ্য দিয়ে- স্টিভ জবস, ক্রিস এন্ডারসনদের মতো Tech জায়ান্টরা সারা পৃথিবীর মানুষদের নিত্যনতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করলেও তাদের নিজেদের সন্তান বা ফ্যামিলি মেম্বারদেরকে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেন। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তারা যা বলেছেন তার সারমর্ম এটাই : Never get high on your own supply. এসব প্রযুক্তির আদ্যোপান্ত জানেন বলেই তারা দূরে থাকতে চাইছেন। লেখক এই অবজার্ভেশনকে বিশ্লেষণ করেছেন নানান উদাহরণ দিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ভিডিও গেইমস, স্মার্ট ওয়াচের মতো প্রযুক্তিগুলো কেন মানুষকে আসক্ত করে ফেলছে তার খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন। দেখেন একটা ব্যাপারে তো সবাই একমত যে, কেউ ইচ্ছে করে এগুলোতে আসক্ত হতে চায় না, সবাই চায় তার কাজটা ঠিকভাবে, সহজভাবে করতে যেটুকু প্রযুক্তির সহায়তা লাগে ততটুকুই ব্যবহার করতে। কিন্তু তারপরেও কেন বেশিরভাগ মানুষের স্ক্রিনটাইম এত বেশী? কেন বেশিরভাগ মানুষ প্রতিদিন ১-৪ ঘণ্টা সময় প্রযুক্তির পেছনে দিচ্ছে? গবেষণা বলছে, পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষের দৈনন্দিন রুটিনে ঘুমের পর সবচেয়ে বেশী সময় দিচ্ছে প্রযুক্তির পেছনে। ৪০% এর বেশী মানুষ বলছেন ইন্টারনেট ব্যবহারে তাদের কোন না কোন ধরনের আসক্তি তৈরি হয়েছে। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, এত ব্যবহার করেও তারা কিন্তু সুখী নেই, বেশিরভাগ মানুষ এর ফলে বিষণ্নতা, মানসিক অবসাদ, দুশ্চিন্তা, অলসতার মতো সমস্যা অনুভব করছেন। পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, কর্মক্ষেত্রের সম্পর্ক সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সমস্যাটা কোথায়? মানুষের ইচ্ছাশক্তি কম? নাকি এসব প্রযুক্তিই আসলে বৈশিষ্টগতভাবেই খারাপ? লেখকের উত্তর- প্রযুক্তি আসলে খারাপ বা ভালো খারাপ এরকম কিছু না, বরং এটাকে কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে সেটাই বড় কথা। মানুষের ইচ্ছাশক্তির অভাব আছে এমন-ও না, বরং সমস্যাটা হচ্ছে কারণ বিভিন্ন জায়ান্ট কোম্পানিগুলো কোটি কোটি ডলার খরচ করছে মানুষের অভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে। সাইকোলজি বা বিহেভিয়র সবদিক থেকে মানুষকে যেন আটকে রাখা যায়, তারা সেজন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মেধাবীদের দিয়ে রীতিমতো গবেষণা করছে। কারণ, এই ক্রিনটাইম মানে মানুষের মনোযোগের চেয়ে বড় পণ্য বা মুদ্রা বর্তমানে আর কিছু নেই। মোবাইলের অ্যাপ্লিকেশন, ভিডিও গেইম কিংবা অন্য যেকোনো ফিচার নিয়ে প্রতিনিয়ত তারা কাজ করছে, ঠিক কী করলে মানুষ আরো বেশী সময় এগুলো ব্যবহার করবে তাই নিয়ে তাদের নিরলস পরিশ্রম চলছে। ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রামে লাইক বা রিঅ্যাকশন, কিংবা বিভিন্ন গেইমের একেকটা মিশন শেষ করার পর যে পুরস্কার ধরনের কিউগুলোকে তারা ট্রিগার বা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। একারণেই সৃষ্টি হচ্ছে সমস্যা। মানুষ চাইলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
তাহলে তাহলে সমাধান কী? লেখক বলকছেন অবশ্যই এই অপব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, আসক্তিগুলোকে বশ করতে হবে বৈজ্ঞানিকভাবে। তিনি এজন্য সাইকোলজি ও হিউম্যান বিহেভিয়য়ের নাড়িনক্ষত্র উদ্ধার করেছেন, কম করে হলেও এই বইতে ১০০০ এর বেশী পেপার বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন কেন এগুলো তৈরি হয়, কীভাবে কাজ করে। তিনি দেখেছেন এই সমস্যার বেশিরভাগ শুরু হয় শৈশবে। ধীরে ধীরে নেশাজাতীয় দ্রব্যের মতো এগুলো মস্তিস্কে ডোপামিনের নিঃসরণ করে। আর একবার অভ্যাসে পরিণত হলে নির্দিষ্ট সময় ও পরিবেশে পুনরায় ক্রেভিংস হয়। লেখক তাই বলছেন এই কিউ বা ট্রিগার, রুটিন ও রিওয়ার্ডকে বুঝতে হবে। সেগুলোর বদলে ইতিবাচক কাজকে ট্রিগারে পরিণত করতে হবে। পাশাপাশি বেশ কিছু সাজেশন দিয়েছেন, যেমনঃ ঘুমানোর সময় মোবাইল বিছানা থেকে দূরে রাখা, কাজের সময় মোবাইলের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা, ই-মেইল বা এমন কাজের জন্য দিনের সুনির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ রাখা, Facebook Demetricator এর মতো টুলগুলোকে ব্যবহার করে ট্রিগার পয়েন্ট অফ রাখা, ছোট বাচ্চাদেরকে স্ক্রিনটাইমের বদলে বাস্তব দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত রাখা ইত্যাদি। আসলে সলিউশনের চাইতে বেশি ফোকাস করা হয়েছে কীভাবে, কেন এসব সমস্যা সৃষ্টি হয় তাতে। লেখকের বিশ্বাস এগুলো নিয়ে জানলে নিজে থেকেই মানুষ সচেতন হবে, খুঁজে নিবে তার করণীয়। চমৎকার একটা বই, যারা প্রযুক্তি নিয়ে আসক্তিতে পড়েছেন তাদের জন্য খুবই উপকারী হবে বলে মনে করি।
তাহলে তাহলে সমাধান কী? লেখক বলকছেন অবশ্যই এই অপব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, আসক্তিগুলোকে বশ করতে হবে বৈজ্ঞানিকভাবে। তিনি এজন্য সাইকোলজি ও হিউম্যান বিহেভিয়য়ের নাড়িনক্ষত্র উদ্ধার করেছেন, কম করে হলেও এই বইতে ১০০০ এর বেশী পেপার বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন কেন এগুলো তৈরি হয়, কীভাবে কাজ করে। তিনি দেখেছেন এই সমস্যার বেশিরভাগ শুরু হয় শৈশবে। ধীরে ধীরে নেশাজাতীয় দ্রব্যের মতো এগুলো মস্তিস্কে ডোপামিনের নিঃসরণ করে। আর একবার অভ্যাসে পরিণত হলে নির্দিষ্ট সময় ও পরিবেশে পুনরায় ক্রেভিংস হয়। লেখক তাই বলছেন এই কিউ বা ট্রিগার, রুটিন ও রিওয়ার্ডকে বুঝতে হবে। সেগুলোর বদলে ইতিবাচক কাজকে ট্রিগারে পরিণত করতে হবে। পাশাপাশি বেশ কিছু সাজেশন দিয়েছেন, যেমনঃ ঘুমানোর সময় মোবাইল বিছানা থেকে দূরে রাখা, কাজের সময় মোবাইলের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা, ই-মেইল বা এমন কাজের জন্য দিনের সুনির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ রাখা, Facebook Demetricator এর মতো টুলগুলোকে ব্যবহার করে ট্রিগার পয়েন্ট অফ রাখা, ছোট বাচ্চাদেরকে স্ক্রিনটাইমের বদলে বাস্তব দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত রাখা ইত্যাদি। আসলে সলিউশনের চাইতে বেশি ফোকাস করা হয়েছে কীভাবে, কেন এসব সমস্যা সৃষ্টি হয় তাতে। লেখকের বিশ্বাস এগুলো নিয়ে জানলে নিজে থেকেই মানুষ সচেতন হবে, খুঁজে নিবে তার করণীয়। চমৎকার একটা বই, যারা প্রযুক্তি নিয়ে আসক্তিতে পড়েছেন তাদের জন্য খুবই উপকারী হবে বলে মনে করি।