shucheta 's review for:

Der Zopf by Laetitia Colombani
2.0

গত ক্রিসমাসে উপহার পেয়েছিলাম। আবার বাসা পাল্টানোর আগে বুকশেলফ কিছুটা হালকা করার জন্য এতদিন পর পড়লাম। আমার জার্মান পড়ার গতি বেশ ধীর। তারপরেও এই বই পড়তে তিনদিন এর বেশি লাগেনি। সাধারণত কোনো বই খুব দ্রুত পড়া গেলে এর কারণ দুইটি হতে পারে। এক, টান টান উত্তেজনাময় গল্পের গাঁথুনি (Harry Potter ধরনের বই)। দুই, সম্পূর্ন অন্তস্বার শূন্য বই (ইমদাদুল হক মিলন ধরনের বই)। এই বই কোন ক্যাটাগরি তে পড়েছে সেটা বলাই বাহুল্য।

তিন জগতের তিন নারী, ভারতের উত্তর প্রদেশের দলিত সম্প্রদায়ের স্মিতা, ইতালির সিসিলির পরচুলা ফ্যাক্টরির গুইলিয়া, আর কানাডার আইনজীবী সারা, এই তিন গল্পের দড়ি দিয়ে লেখিকা বেনী বেঁধেছেন। গল্পটি যেহেতু চুল নিয়ে আবর্তিত আর উপন্যাসের নামও যেহেতু "বেনী", ব্যাপারটা অনেকটা চোখের মধ্যে আঙুল দিয়ে গুতো দেয়ার মত literary simbolism। উপন্যাসের মধ্যে মধ্যে কিছু স্বরোচিত কবিতা(!) ও জুড়ে দিয়েছেন।

পড়তে পড়তে মনে হলো, প্রাশ্চাত্যের লেখকদের মনে হয় ভারতীয় উপমহাদেশের প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে না লেখাই ভাল। প্রথমত, এক সংস্কৃতির ছোটখাটো কিন্তু গুরুত্বপূর্ন অনেক জিনিস অন্য সংস্কৃতির লোকের পক্ষে নির্ভুলভাবে লেখা কঠিন। বইয়ে স্মিতা রাত জেগে তার মেয়ের জন্য শাড়ি সেলাই করে, যেটা আবার মাপে কিছুটা গরমিল হয়। শাড়ি যে সেলাই করার বস্তু না, বা এর যে মাপের তেমন কোনো ব্যাপার নেই, ফরাসি ভদ্রমহিলার সেটা জানার কথা না। তবে ভারতীয় কাউকে দিয়ে একটু প্রুফরিড করিয়ে নিলে এই ধরনের দৃষ্টিকটু ভুল এড়ানো সম্ভব। দ্বিতীয়ত, হয়তো তারা মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই লিখতে বসেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা পেন্টহাউস ফ্ল্যাট থেকে রাস্তায় গরীব মানুষ দেখে, "গরীব মানুষের কত কষ্ট, আহা আহা"র মতই শোনায়। এই সমালোচনা অবশ্য প্রাশ্চাত্যের লেখকদের জন্য সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত না। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি কি পদ্মাপাড়ের জেলের কাছে একইরকম অশালীন লাগবে? শুনেছি অদ্বৈত মল্লবর্মণ নিজেও মালো সম্প্রদায়ের ছিলেন। তিতাস একটি নদীর নাম পড়ে দেখতে হবে।