tiash's reviews
412 reviews

বৃষ্টিতে ভেজার বয়স by Samaresh Majumdar

Go to review page

3.0

আচ্ছা, আশেপাশে এমন মানুষ কি দেখেননি যার বয়সে অনেক দেখে এখনো মনে হয় যেন কলেজ ছাত্রী, এই যেমন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জী বা বলিউড কাপানো তারকা অনীল কাপুর!!!....
ঠিক এদের মতোই মূল চরিত্রে একজন বিধবা মহিলা, কুহেলী। যদিও সাত সন্তানের মা, কিন্তু তার ছোটমেয়ের সাথে দাঁড়ালে বোন বললে ভুল হবে না। কাহিনীর শুরু কুহেলীরর বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজনে। আর তার স্বামীর মৃত্যুবার্ষিকী, কিন্তু তিনি তার সাজে কমতি রাখেন নি কারণ দিনটা তার মুক্তির দিন। স্বামীর বাড়িতে প্রতিবার পেয়েছে পাশবিক ভোগের কষ্ট। রাতে মদ খেয়ে ঝাপিয়ে পড়েছে বিছানায়, কুহেলীর এসবের শেষে এইদিনে তাই তার আনন্দ। এমন সময় ফোন আসে শিবানীর। শিবানী কুহেলীর বান্ধবী। শিবানীর স্বামী নৌবাহিনীতে কাজ করে বছরে ছমাস বাইরে থাকে এসময় শিবানীর অবাধ বিরচন। মদ, পুরুষমানুষ সব মিলিয়ে এলিয়ে যায়। আবার স্বামী থাকাকালে সব বন্ধ। চলে গেলে রাসলীলা শুরু।

শিবানীর হাত ধরে কুহেলীর পরিচয় বিখ্যাত লেখক শোভনের সাথে। এই লেখকে জীবনে তিনটি জিনিসই আছে রুপ, মদ, আর লেখা। রুপের জোরে মেয়েরো অভাব হয় না। এই শোভনের প্রতি দুর্বল হয়ে যায় কুহেলী। শোভনের বদৌলতে সিনেমায় কাজ পায় কুহেলীর ছোট মেয়ে পাখি। এরই মাঝে তার বড় মেয়ে সুজাতা জড়িয়ে পড়ে অন্য এক বয়স্ক লোকের সাথে। লোকটা তার বাবার বন্ধু। তার স্বামী অমিয় এক্ষেত্রে নিরব দর্শক। সিনেমা জগতের সাথে একটা উগ্র আচরণের জিনিসটা সমাজে প্রচলিত। নোংরামো কম দদেখতে হয়নি কুহেলীকে, মেয়ে পাখি তখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। তবুও সসব ঠিক চলছিল। কিন্তু শোভন ধোকা দেয় কুহেলীকে। বিব্ধস্তা কুহেলীর জীবনে নানাদিকে জুড়ে যায় সমস্যা । একদিন দেখা হয় প্রবাসী বাঙালী রুদ্র রায়ের সাথে। সুপুরুষ, ব্যাক্তিত্বপুর্ণ লোকটা কুহেলীর প্রতি দুর্বল হয় ওদিকে কুহেলীও।

এদিকে সুজাতার সাথে থাকাকালে এক্সিডেন্টে মৃত্যু হয় সেই বয়স্ক লোকটার। বিপর্যস্ত পরিবার আর সবার আলাদা থাকার উন্মত্ততার মুখে দাঁড়িয়ে কুহেলী, সময়টা নেহাত উল্টোদিকে।
সম্পর্কের এই বেড়াজালে কিই পরিণতি আছে কুহেলী, রুদ্র, পাখি, সুজাতা, অমিয় আর শিবানীর ভাগ্যে??
সব কিছুর জবাব মিলবে বইটিতে।

#বইটার_সমাজ_বাস্তবতা__
আমাদের সমাজে সিনেমা লাইনের বিষয়ে যে নোংরামোর কথা প্রচলিত আছে, লেখক সেটিকে খুব কাছ থেকে দেখিয়েছেন। পারিবারিক বিশৃঙ্খলা, বহুগামিতা, সম্পর্কে কম্রমাইজের চেয়ে বেশি আধিপত্য বিস্তারের যে বিষয়টা আছে তা লেখক অকপটে বলে গেছেন বেশ সাহসিকতার সাথে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নারীদের অবস্থান ঠিক কোথায়, আধুনিকতার সাথে অপসংস্কৃতির আমদানিসহ বেশ কিছু জিনিস বাস্তব জীবন থেকে চিত্রিত। একজনের বিভিন্ন পরিবেশে চারিত্রক উৎকর্ষ, সৌকর্যের পরিবর্তনটাও আঙ্গুল ধরে দেখিয়েছেন লেখক। মুলকথা কাহিনীটাতে সমাজ বাস্তবতার দিকটা বেশ প্রকট।

#বইটাতে_ভালো_লাগার_দিকটা__
গল্পটা বেশ ইউনিক। একদিকে লেখক বেশ বড়লোক সমাজকে কাছ থেকে দেখিয়েছেন, তেমনি মধ্যবিত্তদের কথাও টেনেছে সমান ভাবে। লেখার এই দ্বৈততা বেশ ভালো লাগার মত। চারিত্রিক বিচার বিশ্লষণটা লেখক দেখিয়েছেন কোমলভাবে, কাহিনীর ছলে, কিন্তু প্রতিটা চরিত্রই সতন্ত্র। সতর্কতার সাথেই বেশ কিছু চরিত্রের সমাবেশে গড়ে ওঠেছে বইটা। যারা এই জনারার বই পড়েন তাদের নিঃসন্দেহে এই দিকটা ভালো লাগবে।

#বইটার_ভালো_না_লাগা
বইটাতে প্রাপ্তবয়স বিষয় একটু বেশি। কয়েকটা জায়গাতে লেখক, চরিত্রের আভিজাত্যটা ধরে রাখতে সমর্থ হননি। মাঝারি আকারের বইটার শুরু আর শেষটা আশাতীত সুন্দর। মাঝের ঘটনার প্রবাহটা আরেকটু দ্রুত হলে ভালো লাগত। বেশ কয়েকটা জায়গাতে লেখক পরিবেশের বর্ণনা টেনে বড় করেছেন যেটার ততটা দরকার ছিল না।

#মতামত__
বইটার সমাজ বাস্তবতাবেশ ফলাও করে দেখানো হয়েছে। মুল চরিত্র কুহেলীর ওপর ফোকাস রেখে বাকিদের চালিয়েছেন বেশ চতুরতার সাথে। যাদের সামাজিক উপখ্যানে লেখা বই ভালো লাগে তারা একবার চেখে দেখতে পারেন।

#সতর্কতা___
বইটাতে এডাল্ট জিনিসের পরিমাণটা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। যদি এই ব্যাপারে এলার্জি থাকে তবে প্লিজ স্কিপ করুন। অপ্রাপ্তবয়স্কদের এই বইটা পড়া উচিত হবে না ।
হাতে মাত্র তিনটে দিন by Suchitra Bhattacharya

Go to review page

4.0

এক্সামের পরের ছুটিতে মিতিন মাসির বাড়িতে বেড়াতে এসেছে টুপুর। বেশ অনেকদিন ধরে মিতিন মাসি কোনো কেস পায় নি বলে ক্ষ্যাপানো শুরু করেছে পার্থ মেসো। মিতিন মাসি নির্লিপ্ত থেকে বুমবুমকে নিয়ে খাটছে। সেদিন সন্ধ্যার পর পর মিতিন মাসির ফোন আসল। লোকটার নাম শুনে স্বয়ং পার্থ মেসো পর্যন্ত চমকে ওঠল। শেঠ রুস্তমজি জরিওয়ালা। কলকাতার সেরা ব্যাবসায়ীর একজন। সম্ভ্রান্ত পারসি।

ঘটনাচক্রে জানা গেল রুস্তমজির ছেলে রৌনক (রনি) কে কিডন্যাপ করা হয়েছে। কিডন্যাপার এক কোটি টাকা দাবি করছে। টাকাটা রুস্তমজির জন্য তেমন কিছু না, কিন্তু তিনি চাইছেন কিডন্যাপারর ধরা পড়ুক। এদিকে রুস্তমজীর স্ত্রী লীলা ডিটেকটিভদদের আগমনটা পছন্দ করেনি। হাজার হোক মায়ের মন।
রনি, সেন্ট পিটার্স স্কুলে ক্লাস ফোরে পড়ে। স্কুলের কড়া নিয়ম কানুনের মাঝখান থেকে সোজা হাপিশ হয়ে গেল যেন সে। স্কুলের কমিটি জানাল, কার্ড দেখিয়েই তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাদের কালো বি এম ডব্লিউ গাড়িতেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে কিডন্যাপাররা সময় দিয়েছে মাত্র তিনদিন। ফোনটা এসেছে একটা পাবলিক টেলিফোন বুঁদ থেকে। কাজে লেগে গেল মিতিন মাসি, জানা গেল আসলেই নিজেদের গাড়িতে করে রনি গিয়েছিল সেদিন। কিন্তু মজার একটা তথ্য হাতে পড়ল, গাড়িটা যদিও রনিদের গাড়ির মতোই দেখতে, কিন্তু আসলে গাড়িটা তাদের না!...
ভাইয়ের সাথে মনোমালিন্য চলছে রুস্তমজির। কিন্তু তার সাথে কেইসের কোনো সম্পর্ক করতে পারল না মিতিন মাসি। এদিকে জুটেছে দ্বিজেন হালদার, যার কোম্পানি থেকে কিডন্যাপেরর গাড়িটা ভাড়া করা হয়েছে। জানা গেল গাড়িটা ভাড়া করা হয়েছে রুস্তমজির অফিস থেকেই। কিন্তু রুস্তমজি এই সম্পর্কে ওয়াকিবহল না।

তবে কে আসল কিডন্যাপার? রুস্তুমজির ভাই? দ্বিজেন হালদার কি মিথ্যে বলছে? নাকি অন্য কেউ কলকাঠি নাড়ছে পেছন থেকে! মিতিন মাসি কি পারবে কিডন্যাপারকে ধরতে নাকি বেঘোরে প্রাণ যাবে রনির...? হাতে তিনটে মাত্র দিন!

#বইটার_ভালো_লাগা_যা_কিছু
মিতিন মাসি একটা ক্রাস😍😍.. টুপুর সঙ্গী হিসেবে বেশ ভাল। বইটাতে পারসিদের কলকাতার আগমন, শেকড় গেড়ে বসার কারণ এসব নিয়ে বেশ কড়া আলোচনা করা হয়েছে যা জ্ঞান বাড়াতে সহায়ক। মিতিন মাসি ঘোরালো পথে না গিয়ে স্বাভাবিক ভাবে হেঁটেছেন। পরিবার আর কাজ দুটিকেই সামলাতে পারে নারীরা। নারীবাদী চরিত্রটা একটা ভালোবাসা..💜💜💜 সুচিত্রার ভাষা অসাধারণ। সাধারণ জিনিসটাকে এত সুন্দর করে বলেন। বেশ আগ্রহ জাগায় সবটা জানতে। বইটার শেষদিকে একটা বড় ধরনের টুইস্ট আছে। সেটাি সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে।

#বইটার_ভালো_না_লাগা
বইটাতে এত বেশি খাবারের বর্ণনা দেয়া। তিন চার পেইজ পর পর তারা খায়.. বুমবুমকে বরাবরের মতোই দুই তিন লাইনের বেশি পুরো বই এ আনেনি। এই বইটার দুই তিনটা পেইজে শেঠরুস্তমজিসাহেব, পার্থমেসোররসিকতা এধরনের স্পেস ছাড়া কয়েকটা শব্দ পেয়েছি।